রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) ৬৩ বছরের ইতিহাসে এবার প্রথমবারের মতো ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন এক নারী শিক্ষার্থী। তিনি হলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাসিন খান।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে প্রার্থিতা ঘোষণা করেন তিনি। ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে সাইবার বুলিংয়ের শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তাসিন।
তাসিন খান জুলাই আন্দোলনে সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাকসুর ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ১৪ দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও একাধিক ছাত্রী কেন্দ্রীয় সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তবে ভিপি পদে এবারই প্রথম কোনো নারী প্রার্থী দাঁড়ালেন।
প্রার্থিতা নিয়ে তাসিন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর রাকসু নির্বাচন নিয়ে যখন আলোচনা শুরু হয়, তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিই আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো। তবে পদ ঠিক ছিল না। শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত করি—ভিপি পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাকসু একটি ঐতিহাসিক প্ল্যাটফর্ম। আমি চাই এমন একটি রাকসু, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বহুত্ব আর মানবিক মূল্যবোধ প্রতিদিনের চর্চায় থাকবে। দীর্ঘদিন অচল থাকা এই প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় ও কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। আমার কোনো দলীয় সাপোর্ট, ফান্ডিং কিংবা কর্মীবাহিনী নেই—তবুও নিজের সক্ষমতার জায়গা থেকে অংশ নিচ্ছি।’
জুলাই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তাসিন বলেন, ‘তখন ভেবেছিলাম হয়তো আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরা হবে না। হয়তো রাজপথেই জীবন শেষ হবে বা কারাগারে কাটাতে হবে বাকি সময়। মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। তাই আজ আমার কিছু হারানোর ভয় বা পাওয়ার লোভ নেই।’
তবে শঙ্কার কথাও জানালেন তিনি। তাসিনের মতে, রাকসু নির্বাচনে বড় ধরনের ক্ষমতার লড়াই আছে, যা ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘সাইবার বুলিং, চরিত্রহনন কিংবা বিকৃত ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার মতো নোংরামির শিকার হতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এন্টি সাইবার বুলিং সেল গঠনের আশ্বাস দিলেও এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।’