ঢাকা , রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি
আমরা সারা বাংলাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দিচ্ছি।
শিরোনাম
গ্যাংগ্রিন আক্রান্ত অলিয়ারের পাশে খালিশপুর থানা যুবদল। বকুলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা। খুলনা-৩ আসনে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের অঙ্গীকার। রকিবুল ইসলাম বকুল। ছাত্রদল নেতা শাওনকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার। সত্য জানার ও পাশে দাঁড়ানোর আহবানঃ আমানউল্লাহ আমান। খানজাহান আলী থানা যুবদলের উদ্যোগে সড়ক পরিষ্কার কর্মসূচি রাকসুর ইতিহাসে প্রথমবার ভিপি পদে নারী প্রার্থী তাসিন খান আগামীর বাংলাদেশ ও ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে মুখোমুখি – খুলনা মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রুবেল। খানজাহানআলী থানার যোগিপোল ইউনিয়নে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: জাতীয় বার্ন থেকে ছাড়পত্র পেলেন শিক্ষিকা নিশি উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় কিডনির ওপর বাড়ে বাড়তি চাপ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি

সন্তানকে কেন্দ্র করে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের সীমারেখা কতটুকু?

  • Reporter Name
  • প্রকাশিত : ০৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • ৯ বার পাঠ করা হয়েছে

তালাক। পবিত্র এক বন্ধনের সমাপ্তি। হৃদয় ভাঙার আর্তনাদ। কল্পনায় আঁকা রঙিন এক জীবনের মূলতবি। লাক দুটি প্রাণে সৃষ্টি করে গভীর শূন্যতা ও ক্ষত। জীবনে নেমে আসে অদ্ভুত এক শূন্যতা, নীরবতার।

তালাক মানে শুধু দুজনার আলাদা হয়ে যাওয়া নয়। বরং তালাক হলো সন্তানের সুখ শান্তি ও ভবিষ্যৎ বিনষ্টকারী এক নিষ্ঠুর প্রতিক্রিয়া। সন্তানের মিষ্টি হাসি কেড়ে নেওয়ার এক নির্মম অভিব্যক্তি। মায়ের কোলে সন্তানের আরামে ঘুমানোর অধিকার খর্ব করা।

বাবার সান্নিধ্য এবং সাহস হারিয়ে ছন্নছাড়া জীবনের পথচলা। তাই ক্ষেত্র বিশেষ তালাক বৈধ হলেও তা নিকৃষ্টতর কাজ। নবীজি বলেন- আল্লাহ তায়ালার কাছে বৈধ বিষয়ের মধ্য থেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হলো তালাক। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-২১৭৮)

বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রী হয়তো বলে বেড়ায় তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই দূরত্ব তাদের কাঁদায়। তারা পরস্পর আবার একত্র হতে চায়। উভয়ের হৃদয়ে বাজে বেদনায় বীণ। অতীতের সুখ স্মৃতি স্মরণ করে উভয়ে বিষন্নতায় ভোগে।

সন্তান আল্লাহর এক পবিত্র নিয়ামত। কলিজাছেঁড়া ধন। তাই বিচ্ছেদের পরও সন্তানের প্রতি মা-বাবার টান শেষ হয় না। কিন্তু তালাকের পর সন্তানের মা বাবার পরস্পর দেখা সাক্ষাতের বৈধতা কতটুকু?

সন্তানকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে ইসলামী নিয়মে যোগাযোগের সীমা

ফতোয়ার কিতাব রদ্দুল মুহতারে বলা হয়েছে- তালাকের পর সাবেক স্ত্রী অন্য সব নারীর মতোই গায়রে মাহরাম হয়ে যায়। (রদ্দুল মুহতার-খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৪৫)

অর্থাৎ ইদ্দতের পর সাবেক স্ত্রী পরনারীর মতো। তখন প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে সবকিছুতেই পরনারীর মতো আচরণ করতে হবে।

বিচ্ছেদের পর সন্তান মায়ের কাছে থাকবে। কারণ সন্তানের মা প্রতিফলনের অধিক হকদার। নবীজি বলেন, অন্যত্র বিয়ে হওয়ার আগ পর্যন্ত সন্তান হেফাজতের অধিক হকদার হলো তার মা। (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং ২২৭৬)

মায়ের কাছে থাকা অবস্থায় সন্তানের সঙ্গে তার বাবা দেখা সাক্ষাত করতে পারবে। এক্ষেত্রে কিছু শর্ত এবং সীমাবদ্ধতা মানতে হবে।

ইবনে কুদামা রহ. বলেন, বাবা চাইলে সন্তানের মায়ের কাছে গিয়ে সন্তানকে দেখতে পারবে। দিনে বা রাতে সন্তানকে তার কাছে নিয়ে আসতে পারবে।  শর্ত হলো, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে নির্জনে যাওয়া যাবে না এবং সন্দেহ বা ফেতনায় পড়ার সুযোগ থাকা যাবে না। (আল মুগনি ৮/১৯৪)

প্রায় একই রকম কথা বর্ণিত হয়েছে ফতোয়ার অন্য কিতাবগুলোতে।

ফতোয়ায়ে আলমগীরী কিতাবের বক্তব্য হলো-

إذا كان الولد عند أمه فللأب أن يراه ويأخذه في وقت، لكن لا يجوز أن يخلو بطليقتها، لأن الخلوة بالأجنبية حرام.

যদি সন্তান মায়ের কাছে থাকে তবে বাবা তাকে দেখতে বা মাঝে মাঝে নিয়ে যেতে পারে। তবে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সঙ্গে নির্জনে বসা জায়েজ নয়। কারণ গায়রে মাহরামের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানো হারাম। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি-১/৫৪৬)

সন্তানের সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে পর্দা ও শালীনতা রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা যাবে। প্রয়োজনীয় কথা বলতে শুধু সন্তান সংক্রান্ত কথাবার্তা। কিন্তু এই সময় নারী পক্ষের কোনো পুরুষের উপস্থিতি জরুরি। কারণ এভাবে বারবার সাক্ষাৎ ফেতনা আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়।

নবীজি বলেন, কোনো পুরুষ যখন কোনো নারীর সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করে তখন তাদের দুজনের সঙ্গে তৃতীয়জন থাকে শয়তান। (সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ২১৬৫)

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

গ্যাংগ্রিন আক্রান্ত অলিয়ারের পাশে খালিশপুর থানা যুবদল। বকুলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা।

সন্তানকে কেন্দ্র করে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের সীমারেখা কতটুকু?

প্রকাশিত : ০৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

তালাক। পবিত্র এক বন্ধনের সমাপ্তি। হৃদয় ভাঙার আর্তনাদ। কল্পনায় আঁকা রঙিন এক জীবনের মূলতবি। লাক দুটি প্রাণে সৃষ্টি করে গভীর শূন্যতা ও ক্ষত। জীবনে নেমে আসে অদ্ভুত এক শূন্যতা, নীরবতার।

তালাক মানে শুধু দুজনার আলাদা হয়ে যাওয়া নয়। বরং তালাক হলো সন্তানের সুখ শান্তি ও ভবিষ্যৎ বিনষ্টকারী এক নিষ্ঠুর প্রতিক্রিয়া। সন্তানের মিষ্টি হাসি কেড়ে নেওয়ার এক নির্মম অভিব্যক্তি। মায়ের কোলে সন্তানের আরামে ঘুমানোর অধিকার খর্ব করা।

বাবার সান্নিধ্য এবং সাহস হারিয়ে ছন্নছাড়া জীবনের পথচলা। তাই ক্ষেত্র বিশেষ তালাক বৈধ হলেও তা নিকৃষ্টতর কাজ। নবীজি বলেন- আল্লাহ তায়ালার কাছে বৈধ বিষয়ের মধ্য থেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হলো তালাক। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-২১৭৮)

বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রী হয়তো বলে বেড়ায় তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই দূরত্ব তাদের কাঁদায়। তারা পরস্পর আবার একত্র হতে চায়। উভয়ের হৃদয়ে বাজে বেদনায় বীণ। অতীতের সুখ স্মৃতি স্মরণ করে উভয়ে বিষন্নতায় ভোগে।

সন্তান আল্লাহর এক পবিত্র নিয়ামত। কলিজাছেঁড়া ধন। তাই বিচ্ছেদের পরও সন্তানের প্রতি মা-বাবার টান শেষ হয় না। কিন্তু তালাকের পর সন্তানের মা বাবার পরস্পর দেখা সাক্ষাতের বৈধতা কতটুকু?

সন্তানকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে ইসলামী নিয়মে যোগাযোগের সীমা

ফতোয়ার কিতাব রদ্দুল মুহতারে বলা হয়েছে- তালাকের পর সাবেক স্ত্রী অন্য সব নারীর মতোই গায়রে মাহরাম হয়ে যায়। (রদ্দুল মুহতার-খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৪৫)

অর্থাৎ ইদ্দতের পর সাবেক স্ত্রী পরনারীর মতো। তখন প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে সবকিছুতেই পরনারীর মতো আচরণ করতে হবে।

বিচ্ছেদের পর সন্তান মায়ের কাছে থাকবে। কারণ সন্তানের মা প্রতিফলনের অধিক হকদার। নবীজি বলেন, অন্যত্র বিয়ে হওয়ার আগ পর্যন্ত সন্তান হেফাজতের অধিক হকদার হলো তার মা। (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং ২২৭৬)

মায়ের কাছে থাকা অবস্থায় সন্তানের সঙ্গে তার বাবা দেখা সাক্ষাত করতে পারবে। এক্ষেত্রে কিছু শর্ত এবং সীমাবদ্ধতা মানতে হবে।

ইবনে কুদামা রহ. বলেন, বাবা চাইলে সন্তানের মায়ের কাছে গিয়ে সন্তানকে দেখতে পারবে। দিনে বা রাতে সন্তানকে তার কাছে নিয়ে আসতে পারবে।  শর্ত হলো, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে নির্জনে যাওয়া যাবে না এবং সন্দেহ বা ফেতনায় পড়ার সুযোগ থাকা যাবে না। (আল মুগনি ৮/১৯৪)

প্রায় একই রকম কথা বর্ণিত হয়েছে ফতোয়ার অন্য কিতাবগুলোতে।

ফতোয়ায়ে আলমগীরী কিতাবের বক্তব্য হলো-

إذا كان الولد عند أمه فللأب أن يراه ويأخذه في وقت، لكن لا يجوز أن يخلو بطليقتها، لأن الخلوة بالأجنبية حرام.

যদি সন্তান মায়ের কাছে থাকে তবে বাবা তাকে দেখতে বা মাঝে মাঝে নিয়ে যেতে পারে। তবে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সঙ্গে নির্জনে বসা জায়েজ নয়। কারণ গায়রে মাহরামের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানো হারাম। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি-১/৫৪৬)

সন্তানের সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে পর্দা ও শালীনতা রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা যাবে। প্রয়োজনীয় কথা বলতে শুধু সন্তান সংক্রান্ত কথাবার্তা। কিন্তু এই সময় নারী পক্ষের কোনো পুরুষের উপস্থিতি জরুরি। কারণ এভাবে বারবার সাক্ষাৎ ফেতনা আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়।

নবীজি বলেন, কোনো পুরুষ যখন কোনো নারীর সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করে তখন তাদের দুজনের সঙ্গে তৃতীয়জন থাকে শয়তান। (সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ২১৬৫)